যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নিয়েই এক নির্বাহী আদেশে জন্মসূত্রে অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার বাতিল করেছেন। তবে এবার সেই আদেশ স্থগিত করেছেন আদালত।
বুধবার ডিস্ট্রিক আদালতের বিচারক দেবোরাহ বোর্ডম্যান এক রুল জারি করে যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী প্রেসিডেন্টের এই আদেশের ওপর প্রাথমিক স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার মার্কিন ফেডারেল আদালতের বিচারক দেবোরাহ বোর্ডম্যান এক রুল জারি করে এ আদেশ দেন, যার ফলে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশটি যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী এখন আর কার্যকর হবে না।
উল্লেখ্য, মার্কিন সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া প্রতিটি ব্যক্তি নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার রাখেন। এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এই আইন বাতিলের প্রস্তাব করলে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত মাসে ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের একটি আদালত এই আদেশের ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। গতকাল বুধবার ওই স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিচারক দেবোরাহ বোর্ডম্যান আরও একটি স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।
বিচারক দেবোরাহ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশটি ১২৫ বছরের পুরানো সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং দুই শতকের বেশি সময় ধরে চলা মার্কিন ইতিহাসের পরিপন্থী।’
এদিকে এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে মেরিল্যান্ডে পাঁচ গর্ভবতী নারী ও দুটি অভিবাসী-অধিকার গ্রুপ মামলা দায়ের করেছিলেন। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বলেছে, ‘মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের আদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।’
অপরদিকে আইন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আইন বাতিলের এই মামলা শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়াতে পারে।
এর আগে প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণেই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ বন্ধ করে দেবেন তিনি। অবৈধ অভিবাসীদের ‘অপরাধী’ হিসেবে বর্ণনা করে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা এমন লাখো অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হবে।
এমন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বোস্টনের ফেডারেল আদালতে জোটবদ্ধভাবে মামলা করেছে ২২টি অঙ্গরাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া ও সান ফ্রান্সিসকো শহর কর্তৃপক্ষ। মামলায় যুক্তি দেওয়া হয়, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার প্রেসিডেন্টের এ চেষ্টা মার্কিন সংবিধানের ভয়ানক লঙ্ঘন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগ দিয়েই প্রথমেই ট্রাম্প সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জারি করা ৭৮টি আদেশ স্থগিত করেন। বাইডেন তার মেয়াদের শেষ দিকে এই আদেশগুলো জারি করেছিলেন, যেগুলোর বেশ কয়েকটি বাস্তবায়ন হয়নি।