যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার দখল নিতে চান যুক্তরাষ্ট্র। এমনটিই জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ অবস্থায় ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র পুনর্বাসিত করার পরিকল্পনা রয়েছে তার।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন। মঙ্গলবার তার সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প এ পরিকল্পনার ঘোষণা দেন। এ ঘোষণায় ট্রাম্প জানান, গাজাকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করতে চান তিনি। তবে কীভাবে তিনি এ উন্নয়ন ঘটাবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি।
ছোট্ট এ উপত্যকাকে ‘ধ্বংসস্থল’ বলে আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প গাজা দখলের পরিকল্পনা ঘোষণার কয়েক দিন আগে সেখানকার ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পুনর্বাসন করার প্রস্তাব দেন।
বর্তমানে ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে যুদ্ধের পর গাজায় যুদ্ধবিরতি চলছে।
এ নিয়ে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকার দখল নেবে এবং আমরা এটিকে নিয়ে কাজও করব। আমরা এটির মালিক হব এবং সেখান থেকে সব বিপজ্জনক অবিস্ফোরিত বোমা ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র ধ্বংস করার দায়দায়িত্ব নেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি প্রয়োজন হয়, আমরা এটা করব। আমরা ভূখণ্ডটির দখল নিতে যাচ্ছি। আমরা এটির উন্নয়ন করতে চলেছি। এখানে হাজার হাজার কাজের সুযোগ তৈরি হবে এবং এটা এমন কিছু হবে, যার জন্য পুরো মধ্যপ্রাচ্য অনেক গর্বিত হবে।’
এদিকে গাজায় কারা বসবাস করবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, এটা বিশ্বের সব মানুষের বাড়ি হবে। নেতানিয়াহু বলেন, ট্রাম্প প্রচলিত চিন্তাভাবনার বাইরে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে ভাবছেন ও প্রচলিত ভাবনা কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র গাজার নিয়ন্ত্রণ নিলে তা ওয়াশিংটন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অধিকাংশের বহু দশকের গৃহীত নীতির পরিপন্থী হবে। এ নীতিতে বলা আছে, গাজা একদিন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অংশ হবে এবং অধিকৃত পশ্চিম তীর এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য সরকারের আমলে গাজায় মার্কিন সেনা মোতায়েনের বিষয়টি এড়িয়ে চলা হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি একটি দীর্ঘমেয়াদি মালিকানা দেখতে পাচ্ছি এবং আমি দেখতে পাচ্ছি, এটা মধ্যপ্রাচ্যের এ অংশে দারুণ স্থিতিশীলতা বয়ে আনবে। আমি বেশ কয়েক মাস ধরে খুব নিবিড়ভাবে এ নিয়ে গবেষণা করেছি।’ তিনি গাজা সফরে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন। তবে কবে নাগাদ যাবেন, সে বিষয়ে কিছু বলেননি।
এর আগে ট্রাম্প আবারও জর্ডান, মিসর ও অন্যান্য আরব দেশকে গাজার বাসিন্দাদের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘গাজার বাসিন্দাদের সামনে উপত্যকাটি ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। গাজাকে পুনরায় নির্মাণ করতে হবে।’