জনপ্রিয়তার বিচারে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট বেশ পিছিয়ে রয়েছে। দেশটিতে রাগবি, বেসবল, বাস্কেটবল ও ফুটবল প্রথমসারির ক্রীড়া হিসেবে প্রাধান্য পায়। তবে গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশটিতে ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। যার সুফল পাওয়া শুরু হবে আসছে জুন মাসে। যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ যৌথভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করবে। যুক্তরাষ্ট্রে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই হবে প্রথম বড় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট।
স্বাগতিক হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে এবারের বিশ্বকাপে কোনো যোগ্যতা অর্জন বা বাছাইপর্ব খেলতে হয়নি। ২০ দলের আসরটিতে ‘এ’ গ্রুপে সরাসরি খেলবে তারা। আগামী ২ জুন কানাডার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলবে দলটি। যেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে অবশ্য তারা ভারত, পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলকেও পেয়েছে। গ্রুপে পঞ্চম দল হিসেবে রয়েছে আয়ারল্যান্ড। শক্তির বিবেচনায় আইরিশরাও বেশ এগিয়ে থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ভেন্যুতে হবে বিশ্বকাপের ম্যাচ। খেলা হবে ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি, ফ্লোরিডার ব্রোয়ার্ড কাউন্টি এবং নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টিতে। গত বছরে আইসিসির প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালারডাইস ভেন্যুর নাম ঘোষণা করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি ভেন্যু ঘোষণা করতে পেরে আমরা আনন্দিত। কৌশলগতভাবে এটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার এবং ভেন্যুগুলো বিশ্বের বৃহত্তম ক্রীড়া বাজারে একটি বার্তা দেওয়ার সুযোগ করে দেবে।’
আইসিসির একটি প্রতিনিধিদল গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের ভেন্যু পরিদর্শনে গিয়ে ওয়াশিংটনের জর্জ ম্যাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠটিও পছন্দ করে এসেছিল। এই মাঠে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ হবে বলে জানিয়েছে আইসিসি।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ক্রিস গেইল মনে করেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে খেলাধুলার বাজার ধরতে পারবে ক্রিকেট। তাতে ক্রিকেট খেলাটা নতুন এক উচ্চতায় উঠবে বলেও মনে করেন ইউনিভার্স বস খ্যাত এই তারকা।
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বড় ধামাকা হতে যাচ্ছে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটি। আগামী ৯ জুন নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে হাইভোল্টেজ এই ম্যাচটিতে ধারণা করা হচ্ছে গ্যালারিতে তিলঠাঁই থাকবে না। ভেন্যুর দর্শক ধারণক্ষমতা ৩৪ হাজার হলেও টিকিটের জন্য ২০০ গুণ বেশি আবেদন জমা পড়েছে বলে এর আগে জানিয়েছিল আইসিসি।
চলতি মাসের শুরুতে বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করে সহ-আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে জায়গা করে নিয়েছে পাঁচ দেশের ১১ ক্রিকেটার। সবচেয়ে বেশি ৫ জন ভারতের।
স্টিভেন টেইলর, অ্যারন জোন্স, নসথুশ কেনজিগে ও জেসি সিং ছাড়া বাকি ১১ জনের কেউই যুক্তরাষ্ট্রের নন। এর মধ্যে জেসি আবার ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাকে বাদ দিয়ে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছেন আরও ৫ ভারতীয়। ভারতের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুজন করে আছে পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার।
এদিকে একজন বাংলাদেশিও মার্কিন মুল্লুকের ক্রিকেট উন্নয়নে কাজ করছেন। টাইগার জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার গোলাম নওশের প্রিন্স দুই বছর আগে যোগ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট অপারেশন্সসের দায়িত্ব পালন করছেন। দুই বছর মেয়াদ শেষে প্রিন্সকে আবারও দুই বছরের জন্য দায়িত্ব দিয়েছে ইউএস ক্রিকেট।