নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে অসাধারণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ডাচদের ২৫ রানে হারিয়ে আসরের সুপার এইটের আশাও বাঁচিয়ে রাখল টাইগাররা। নেপালের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জিততে পারলেই কোনো হিসেব ছাড়া পরের পর্বে জায়গা করে নেবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে আরনস ভ্যাল গ্রাউন্ডে ডি গ্রুপের ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুদল। যেখানে প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশ সাকিব আল হাসানের হাফসেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান করে। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানের বেশি করতে পারেনি নেদারল্যান্ডস।
১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা নেদারল্যান্ডসের ইনিংস প্রথম আঘাত করেন তাসকিন আহমেদ। মাইকেল লেভিটকে ১৮ রানে ফেরান এই পেসার। এরপর আরেক ওপেনার ম্যাক্স ও’ডোওডকে নিজেই দারুণ এক ক্যাচে মাঠ ছাড়া করার তানজিম হাসান সাকিব।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করা বিক্রমজিত সিংকে মাহমুদউল্লাহ লিটন দাসের স্টাম্পিংয়ে ফেরান। এই ব্যাটার ১৬ বলে ৩টি ছক্কায় ২৬ রান করেন। কিন্তু সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্র্যাখ্ট বিক্রমজিতের সঙ্গে ২৩ বলে ৩৭ ও অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসের সঙ্গে ৩১ বলে ৪২ রানের জুটি গড়ে নেদারল্যান্ডসকে জয়ের সম্ভাবনা দেখান।
অবশেষে একই ওভারে এঙ্গেলব্র্যাখ্ট ও বাস ডি লেডেকে ফিরিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন রিশাদ হোসেন। এঙ্গেলব্র্যাখ্ট ২২ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৩ রান করেন। এরপর ২৩ বলে ২৫ রান করা এডওয়ার্ডসকে জাকের আলীর ক্যাচে ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান। রিশাদ নিজের শেষ ওভারে আরও একটি উইকেট দখল করেন। এবার লোগান ভ্যান বিককে নিজেরই ক্যাচে ফেরান। তাসকিন নিজের ও ইনিংসের শেষ ওভারে টিম প্রিঙ্গেলকে বোল্ড করে দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন।
বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট পান রিশাদ। তাসকিন দুটি উইকেট দখল করেন।
টস হেরে এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের হয়ে এ ম্যাচেও ব্যর্থতার পরিচয় দেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাস। আরায়ান দত্তের বলে এই দুই ব্যাটার নিজেদের উইকেট বিলিয়ে দেন। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন তানজিদ হাসান তামিম। এই তরুণ ওপেনার তৃতীয় উইকেট জুটিতে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ৩২ বলে ৪৮ রান তোলেন।
তবে নিজের ইনিংস খুব বেশি বড় করতে পারেননি তানজিদ। পল ভ্যান মিকেরেনের বলে আউট হওয়ার আগে ২৬ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৫ করেন। এরপর বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে পুরোপুরি হাল ধরেন অভিজ্ঞ সাকিব। দীর্ঘদিন পর ফিফটির দেখা পাওয়া এই তারকা শেষ অবধি অপরাজিত থাকেন।
তিনি ৪৬ বলে ৯টি চারে ৬৪ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। এই ব্যাটার মাঝে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও জাকের আলীর সঙ্গে ছোট দুটি জুটি গড়ে বাংলাদেশের ইনিংস দেড়শ ছাড়াতে সাহায্য করেন। রিয়াদ ২১ বলে ২৫ করে আউট হলেও ও জাকের ৭ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
নেদারল্যান্ডস বোলারদের মধ্যে ২টি করে উইকেট পান আরায়ান দত্ত ও পল ভ্যান মিকেরেন।
এই গ্রুপে ৩ ম্যাচের সবকটি জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা আগেই সুপার এইট নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জেতার পর প্রোটিয়াদের বিপক্ষে অল্পের জন্য হেরে যায়। তবে আজকের জয়ে ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট অর্জন করে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। নেদারল্যান্ডস ৩ ম্যাচের একটিতে জিতে ২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রয়েছে। নেপাল ২ ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে চারে। তবে নেপাল ও নেদারল্যান্ডসের হাতে-কলমে এখনও সুযোগ থাকলেও আজকের পর বাদ পড়েছে শ্রীলঙ্কা। ৩ ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে তারা।