ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করা ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করায় ৫ বাংলাদেশিসহ ৪ শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থীর ‘স্টুডেন্ট ভিসা’ বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে হওয়া আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই তথ্য নিশ্চিত করেন। রুবিও বলেছেন, ভিসা বাতিল হওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীদেও বেশির ভাগই ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন করতে গিয়ে সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের শনাক্ত করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, গত এক সপ্তাহে এই পাঁচ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়। তাদের মধ্যে দুজন সিলেটের, দুজন ঢাকার এবং একজন বগুড়ার। এই খবর প্রকাশের পর যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে লেখাপড়া করছেন। গত বছর ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত বিক্ষোভে শত শত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অংশ নেন।
ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
সোমবার স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ১২টার দিকে প্রগতি সারণিতে মিছিল করে মার্কিন দূতাবাসের সামনে সড়কে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা।
এ সময় দূতাবাসের নিরাপত্তায় সেখানে অবস্থান নেয় সেনা ও পুলিশ সদস্যরা। তারা আশেপাশে জড়ো হওয়া মানুষকে তল্লাশি করে। দূতাবাসের সামনে ফুটপাতে বা রাস্তায় কাউকে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না। বিক্ষোভের কারণে প্রগতি সারণিতে যান চলাচল সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়।
ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ
ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি ও ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
গাজায় হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মানববন্ধন
গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে 'নো ওয়ার্ক, নো স্কুল' কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এসময় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে।
গাজায় ইসরায়লি হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিশ্বব্যাপী গড়ে ওঠা আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি সফল করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে সোমবার তাদের কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকার পাশাপাশি সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সব অফিস বন্ধ রাখা হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অফিসে কর্মবিরতি পালন করা হবে। সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
ইসরায়েলি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রশাসন। এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে তারা এ তথ্য জানায়।
বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে সংহতি ও বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
‘দ্যা ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছেন চবি ও রাবি শিক্ষার্থীরাও।
এদিকে এই কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকাল ৯টার দিকে বাড্ডা ক্যাম্পাসের সামনে এই বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফার তথ্যমতে, ফিলিস্তিনি ন্যাশনাল এবং ইসলামিক ফোর্সেস গ্রুপ নামে একটি সংগঠন গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে সোমবার বিশ্বব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে।
এটি মূলত দ্বিতীয় ইন্তিফাদার পরপরই ইয়াসির আরাফাতের অনুমোদনে এবং মারওয়ান বারগুতির নেতৃত্বে গঠিত একটি জোট।
উল্লেখ্য গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত শিশু, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।