পদত্যাগ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম

Media

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মো. নাহিদ ইসলাম। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। দলটির আহ্বায়কের দায়িত্ব নাহিদ ইসলাম নিতে পারেন বলে জানা গেছে।

পদত্যাগপত্রে  প্রধান উপদেষ্টাকে নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, ‘আমার সশ্রদ্ধ সালাম গ্রহণ করুন। প্রথমেই আমি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহত সহযোদ্ধাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের পরে ছাত্র-জনতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পরিবর্তিত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য আপনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। বৈষম্যহীন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ পড়তে আপনার নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদে আমাকে সুযোগ দানের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।’

নাহিদ আরও লেখেন, ‘গত ৮ আগস্ট শপথ নেওয়া উপদেষ্টা পরিষদে আমি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাই। নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আপনার নেতৃত্বে দায়িত্ব পালনে সদা সচেষ্ট থেকেছি। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমার ছাত্র-জনতার কাতারে উপস্থিত থাকা উচিত মর্মে আমি মনে করি। ফলে আমি আমার দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়া সমীচীন মনে করছি।’

নাহিদ ইসলাম সবশেষে লেখেন, ‘ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি চাচ্ছি। আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে মহোদয়কে সবিনয় অনুরোধ করছি।’

 

‘বাংলাদেশে ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার অনুদান পেয়েছে এক প্রতিষ্ঠান, যার নাম কেউ শোনেনি’

যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে যে অনুদান দিয়েছিল, তার মধ্যে ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার ‘কেউ নাম শোনেনি’ এমন একটি প্রতিষ্ঠানের হাতে গিয়ে পড়েছে। এমনটিই জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ট্রাম্প বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু দুইজনকে নিয়ে গঠিত। শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে দেশটির গভর্নরদের নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে দুই কোটি ৯০ লাখ ডলার দেওয়া হয়। এটা এমন এক প্রতিষ্ঠান পেয়েছে, যার নাম আগে কেউ শোনেনি।’

ট্রাম্প বলেন, ‘কল্পনা করতে পারেন! আপনার ছোট একটি প্রতিষ্ঠান আছে; আপনি এখান থেকে ১০ হাজার ডলার, সেখান থেকে ১০ হাজার ডলার পান। এর মধ্যে আপনি মার্কিন সরকারের কাছ থেকেই পেয়ে গেলেন দুই কোটি ৯০ লাখ ডলার।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দুজন লোক কাজ করেন, দুজন। আমার মনে হয়, তারা এখন খুবই খুশি; খুবই ধনী। কোনো ব্যবাসায়িক সাময়িকীর প্রচ্ছদে শিগগিরই তাদের ছবি ছাপা হবে, প্রতারণায় সেরা হওয়ার জন্য।’

এদিকে সরকারের ব্যয় কমাতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তোড়জোড় শুরু করেছেন ট্রাম্প। এ জন্য গঠন করেন ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভার্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (ডিওজিই), যেটির প্রধান হিসেবে আছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। বিভিন্ন খাতের বরাদ্দে কাটছাঁট করা এই বিভাগের অন্যতম লক্ষ্য।

ট্রাম্প প্রশাসন এর প্রমাণও রাখতে শুরু করেছে। বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় জনবল ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে মার্কিন সহায়তা বিশেষ করে ইউএসএআইডির সহায়তা বন্ধের ঘোষণা এসেছে।

এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৫টি অনুদান বাতিলের তথ্য দেয় ডিওজিই। সেখানে বাংলাদেশের ২৯ মিলিয়ন ডলারও রয়েছে। ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে’ ওই অনুদান দেওয়ার কথা ছিল বলে ডিওজিইর পোস্টে বলা হয়।

বক্তৃতায় ট্রাম্প বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কথা বলার আগে ভারতেও যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এমন ধরনের সহায়তা নিয়ে কথা বলেন। ডিওজিইর বাতিল হওয়া অনুদানের তালিকায় ভারতের 'ভোটার উপস্থিতি' বাড়ানোর ২১ মিলিয়ন ডলারও ছিল।

তবে গভর্নরদের সঙ্গে আলোচনায় ভারতকে দেওয়া অনুদানের প্রসঙ্গ তুলে ধরে ট্রাম্প বলেন, “আমার বন্ধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভারতকে দেওয়া হয় দুই কোটি ১০ লাখ ডলার। এটা দেওয়া হয় ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য। ‘তাহলে আমাদের বেলায় কী হবে? আমিও তো চাই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ুক।’

দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমেই ইউএসআইডির ওপর খড়্গহস্ত হন ট্রাম্প। মার্কিন এই সংস্থা গত শতকের ষাটের দশক থেকেই বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহযোগিতা কার্যক্রম দেখভাল করে আসছে।

ট্রাম্প ও মাস্কের দাবি, সংস্থাটি অহেতুক নানা প্রকল্পে মার্কিন করদাতাদের অর্থ খরচ করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কাজে তো আসেইনি, উল্টো জালিয়াতির মাধ্যমে অনেককে পকেট ভরার সুযোগ করে দিয়েছে।

ইউএসএআইডি বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক প্রচারণা নিয়ন্ত্রণেও অর্থ ব্যয় করেছে বলে অভিযোগ তাদের। মার্কিন সরকারের খরচ কমাতে লোকবল ছাঁটাইও শুরু করেন ট্রাম্প। সবশেষ পেন্টাগন ও অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগের (আইআরএস) ১১ হাজারের বেশি কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।