আয়নাঘর পরিদর্শনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস

Media

কথিত আয়নাঘর পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বিদেশি গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে সেখানে যান।

ড. ইউনূস রাজধানীতে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাবের হেডকোয়ার্টারে অবস্থিত আয়নাঘরসহ তিনটি স্থান পরিদর্শন করেন। যেখানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের এসব স্থানে আটকে রাখা হতো বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শফিকুল নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, কাউকে কাউকে আট-নয় বছরও আটকে রাখা হয়েছিল।

এ নিয়ে পরে সাংবাদিকদের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা একটা বিভৎস দৃশ্য। মানুষের মনুষ্যত্ববোধ বলে যে কোনো জিনিস আছে সেটার থেকে বহু দূরে গভীরে নিয়ে গেছে। নৃশংস অবস্থা প্রতিটি জিনিস যে হয়েছে এখানে। যতটা শুনি অবিশ্বাস্য লাগে যে এটা কি আমাদেরই দেশ, আমাদেরই জগৎ?’

তিনি আরও বলেন, ‘বিনা কারণে জঙ্গি আখ্যায়িত করে মানুষকে তুলে এনে এসব টর্চার সেলে নির্যাতন করা হতো।’

‘এখন শুনি সারা বাংলাদেশ জুড়েই আরও সাতশ- আটশ আয়নাঘর আছে। আমার ধারণা ছিল শুধু এখানেই আছে। এগুলার সংখ্যাও নিরূপন করা যায় না, কতটা জানা আছে, কতটা অজানা আছে।’-যোগ করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা গুম কমিশনকে এসব আয়নাঘর আবিষ্কার করার জন্য ধন্যবাদ জানান। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত বলে একটা কথা আছে না, গত সরকার এই আইয়ামে জাহেলিয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছে সর্বত্র।’

তিনি জানান, গুম কমিশনের প্রতিবেদনে এই আয়নাঘরের ডকুমেন্টেশন বাধ্যতামূলক করা হবে। একইসাথে যারা এ ধরনের কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিল তাদের বিচার করা হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। এসব তথ্য-প্রমাণ সিলগালা করে রাখা হবে এবং বিচারের জন্য ব্যবহৃত হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে  গত জুলাইয়ে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়ার পর ডিজিএফআইয়ের যে টর্চারসেলে রাখা হয়েছিল উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে। আজ সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে কক্ষটি তিনি চিনতে পেরেছেন। দেয়ালের উপরের অংশের খোপগুলোতে এক্সস্ট ফ্যান ছিল বলে জানান তিনি।

এছাড়া গত জুলাইয়ে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়ার পর ডিজিএফআইয়ের যে টর্চারসেলে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে রাখা হয়েছিল আজ সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে কক্ষটি চিনতে পারেন তিনি। এই কক্ষের একপাশে টয়লেট হিসেবে একটি বেসিনের মতো ছিল বলে জানান তিনি। ৫ আগস্টের পর এই সেলগুলোর মাঝের দেয়াল ভেঙে ফেলা হয় এবং দেয়াল রং করা হয়।